নিউজ ডেস্ক:
মাগুরা:১৯ এপ্রিল ২০২৫ (মাগুরার কাগজ):
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষক পদোন্নতি, প্রযুক্তিগত সুবিধা ও কর্মপরিবেশ উন্নয়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বেশ কিছু বাস্তব সমস্যা ও প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছেন। আজ শনিবার সকাল ১০ টায় মাগুরা অডিটোরিয়ামে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আয়োজিত এ সভায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তারা অংশ নেন।
মাগুরা সদর সহকারী উপজেলা প্রাথমিক অফিসার তৌহিদুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের জন্য ইনসেনটিভ চালু করা সময়ের দাবি। যদিও বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ রয়েছে, তবে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের নিজস্ব কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বরাদ্দ নেই। একই পদে দীর্ঘদিন কর্মরত থাকলেও পদোন্নতির সুযোগ না থাকায় পেশাগত অগ্রগতিতে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।

মাগুরা শালিখা উপজেলা রিসোর্চ সেন্টারের পরিদর্শক অপূর্ব মণ্ডল বলেন, বাংলা বিষয়ের দক্ষ শিক্ষককে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদানে যুক্ত করা প্রয়োজন। তারা জানান, পাঠ্যসূচিতে সহশিক্ষা কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এছাড়া প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাপটপ বা প্রজেক্টরের অভাবে শিক্ষকরা ব্যক্তিগতভাবে সরঞ্জাম সংগ্রহে বাধ্য হচ্ছেন, যা দূর করা জরুরি।

মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ (চবি মাগুরার কাগজ)
মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, অনেক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ক পদ শূন্য থাকায় প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তারা দ্রুত শূন্য পদে নিয়োগ এবং অতিরিক্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদ সৃষ্টির দাবি জানান। পাশাপাশি, মিড-ডে মিল চালু, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত নির্ধারণ এবং প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা পুনরায় চালুর আহ্বানও জানানো হয়।
শিক্ষাবিদ ও মাগুরা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বলেন, উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব। তিনি প্রতিটি বিদ্যালয়ে সময়োপযোগী ইন-হাউস প্রশিক্ষণ ক্যালেন্ডার ও উপকরণ সরবরাহের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

মাগুরা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার(ছবি মাগুরার কাগজ
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি৪) মো. আতিকুর রহমান বলেন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সত্ত্বেও দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মান এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি বিভিন্ন এলাকায় বিরাজমান সংকটকে ‘নেই নেই অবস্থা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। পাশাপাশি, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচনে স্বচ্ছতা এবং প্রধান শিক্ষকদের নেতৃত্বগুণ বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মূল্যায়নের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পরীক্ষার নির্দিষ্ট ফি চালুর প্রস্তাবও দেন তিনি।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি৪) মো. আতিকুর রহমান(ছবি মাগুরার কাগজ)
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
© All rights reserved © 2025 magurarkagoj.com