বিভ্রান্তিকর প্রচারণায় ক্ষোভ, নিতাই রায় চৌধুরীর সক্রিয়তা ও নয়নের অবস্থান নিয়েও আলোচনা
মাগুরা, ৩০ অক্টোবর ২০২৫ (মাগুরার কাগজ):
মাগুরা–২ (মহম্মদপুর, শালিখা ও সদর আংশিক) আসনটি এক সময় আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯৪ সালের আগ পর্যন্ত এ আসনে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরাই বিজয়ী হন। তবে ১৯৯৪ সালে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে প্রথমবারের মতো জনাব কাজী সালিমুল হক কামাল নির্বাচিত হয়ে এ আসনটিকে বিএনপির শক্ত ঘাঁটিতে রূপান্তরিত করেন। কাজী সালিমুল হক কামাল পঞ্চম,ষষ্ঠ ও অষ্টম জাতীয় সংসদে মাগুরা-২আসনের সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন
দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, সততা, ত্যাগ ও উন্নয়নমূলক ভূমিকার কারণে কাজী সালিমুল হক কামাল আজও তৃণমূলের আস্থার প্রতীক। স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন, তিনি শুধু রাজনীতিক নন—জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি। তাঁর নেতৃত্বে মাগুরা–২ আসনে শিক্ষা, সড়ক, স্বাস্থ্য, কৃষি ও বিদ্যুৎ খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে।
শালিখার এক প্রবীণ বিএনপি কর্মী জানান, কাজী সালিমুল হক কামাল নিজের স্বার্থে নয়, বরং মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করেন বলেই তিনি আজও জনমানসে শ্রদ্ধার আসনে আছেন।মহম্মদপুরের এক যুবনেতার মতে, কারাবাসকালেও তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন এবং প্রতিটি সংকটে পাশে থেকেছেন। তাঁদের দাবি, মাঠের রাজনীতিতে কামালের জনপ্রিয়তা অটুট ও অবিসংবাদিত।
সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।তৃণমূলের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ব্যক্তিস্বার্থে অনুপ্রাণিত এই গোষ্ঠী অর্থের বিনিময়ে ভুয়া প্রতিবেদন, ভিডিও ও পোস্টের মাধ্যমে মাঠের বাস্তবতা বিকৃত করছে।
স্থানীয় বিএনপির এক সাবেক ইউনিয়ন সভাপতি জানান, এসব বিভ্রান্তিকর প্রচারণা দলের ঐক্য নষ্ট করছে এবং পরীক্ষিত নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। তাঁর মতে, কাজী কামালের জনপ্রিয়তা কোনো অনলাইন প্রচারণা দিয়ে মুছে ফেলা সম্ভব নয়।

রবিউল ইষলাম নয়ন

নিতাই রায় চৌধুরী
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ–সভাপতি নিতাই রায় চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে মাগুরা–২ আসনে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয়। তিনি এলাকায় সভা–সমাবেশ করছেন ও কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তবে তৃণমূল পর্যায়ে তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি বলে তৃঙনমূলে কথা রয়েছে।
রাজনৈতিক সূত্রে জানা যায়, নিতাই রায় চৌধুরী ২০০১ সালে মাগুরা–১ আসনে, এবং ২০০৮ ও ২০১৮ সালে মাগুরা–২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, মাঠের বাস্তবতা উপেক্ষা করে ভুল প্রার্থী নির্বাচন করা হলে বিএনপি এ আসনটি হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারে, এমনকি আসনটি জামায়াতের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন সম্প্রতি নিজেকে মাগুরা–২ আসনের সম্ভাব্য
প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে তৃণমূলের ভেতর থেকে জানা গেছে, বাস্তবে তিনি কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষেই কাজ করছেন এবং মাঠ পর্যায়ে তাঁর সমর্থন সংগঠনে ভূমিকা রাখছেন বলে স্থানীয়দের মধ্যে এমন গুঞ্জন রয়েছে।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন, ত্যাগ ও কারা নির্যাতনের স্বীকৃতি হিসেবে তৃণমূল নেতাকর্মীরা আশা প্রকাশ করেছেন—আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা–২ আসনে কাজী সালিমুল হক কামালকেই বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
তাদের মতে, কাজী কামালের নেতৃত্বেই এ আসনে বিএনপির ঐক্য ও সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে এবং দলের ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ থাকবে। স্থানীয় নেতারা মনে করেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উচিত মাঠের বাস্তবতা ও তৃণমূলের মনোভাব গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা, বিভ্রান্তিকর অনলাইন প্রচারণা নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মাগুরা–২ আসনটি এখনো বিএনপির সম্ভাবনাময় ঘাঁটি। কাজী সালিমুল হক কামালের অভিজ্ঞতা, জনসম্পৃক্ততা ও ত্যাগ তাঁকে অন্যদের তুলনায় অনেক এগিয়ে রেখেছে।
অন্যদিকে নিতাই রায় চৌধুরী সাংগঠনিক সক্রিয়তা দলীয় রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দিলেও তৃণমুলে তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি।
বিশ্লেষকদের অভিমত, যদি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তৃণমূলের মতামতকে প্রাধান্য দেয়, তবে কাজী সালিমুল হক কামালের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে এবং মাগুরা–২ আসন আবারও বিএনপির নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিণত হতে পারে।
ভুল প্রার্থী বাছাইয়ে মাগুরা–২ আসন হারানোর ঝুঁকি বাড়ছে বলে তৃণমূল মনে করছে। কিন্তু জনগণের ভালোবাসা, ত্যাগ ও দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার কারণে এখনো একক আস্থার নাম কাজী সালিমুল হক কামাল।
© All rights reserved © 2025 magurarkagoj.com