খুলনায় /বালু /খেকোদের /কবলে /কয়রা /নদী : /ভাঙনে/ ক্ষোভ /বাড়ছে, /ব্যবস্থা /নেই /প্রশাসনে
ফরহাদ হোসাইন
কয়রা প্রতিনিধি |মাগুরার কাগজ
বুধবার,২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
খুলনার কয়রার কপোতাক্ষ, শাকবাড়িয়া ও খোলপেটুয়া নদীজুড়ে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজারের মাধ্যমে এসব নদী থেকে বালু তুলছে। এর ফলে নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। অথচ প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি অনুমোদন ছাড়াই রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন এসব বালু ব্যবসায়ী। রয়্যালটি না দিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থে তারা নদী থেকে বালু তোলায় সরকারের রাজস্বও হারাচ্ছে। এলাকাবাসী চাঁদপুরের আলোচিত ‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম খানের উদাহরণ টেনে বলেন—“সাধারণ মানুষ আইন ভাঙলে শাস্তি পায়, কিন্তু প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা কেন আইনের বাইরে থাকবে?”
পরিবেশকর্মীরা সতর্ক করে বলেন, লাগাতার বালু উত্তোলনের কারণে নদীগুলোতে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর শত শত পরিবার বসতভিটা হারাচ্ছে, নদীপথ সংকুচিত হয়ে পড়ায় নৌচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। মাছসহ বিভিন্ন জীববৈচিত্র্যও মারাত্মক হুমকির মুখে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, “দিনরাত ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। আমরা বারবার প্রশাসনকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদিত জায়গা ছাড়া বালু উত্তোলন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের জরিমানা ও শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি রয়্যালটি আদায় করা সম্ভব।
কিন্তু প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল। স্থানীয়দের মতে, প্রশাসন চাইলে খুব সহজেই অবৈধ বালু ব্যবসা বন্ধ করা সম্ভব। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব ও গোপন স্বার্থের কারণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এ অবস্থায় নদী ও পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। তারা সতর্ক করে বলেন—“যদি এখনই বালু তোলা বন্ধ না করা হয়, তবে কয়রার গ্রামগুলো অচিরেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।”
© All rights reserved © 2025 magurarkagoj.com