নিউজ ডেক্স: ১৫ মার্চ ২০২৫
মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের নিত্তানন্দপুর উত্তরপাড়া গ্রামে ১৪ মার্চ, শুক্রবার দুপুর ২ টায় একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এলজিইডির পাকা রাস্তার কাজ চলাকালীন সময়ে রুলার চালকের গাফিলতির কারণে ২.৫ বছর বয়সী শিশু তাকরিম সর্দ্দারের মৃত্যুর অভিযোগ।
তাকরিম সর্দ্দার স্থানীয় আব্দুল্লাহ সর্দ্দারের ছেলে। মৃত শিশুটির দাদি আনজিরা বেগম (৬০) জানান, “আমার পুত্রপুত্রিকা তাকরিম রাস্তায় খেলছিলো, এ সময় রুলার চালকের গাফিলতির কারণে তার মৃত্যু হয়। রুলারের সামনে ও পিছনে কোনো লোক ছিল না, একাই গাড়ি চালাচ্ছিলো চালক। আমার পুত্রপুত্রিকার মৃতদেহের অবস্থা ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ; তার মাজা থেকে পা পর্যন্ত সব কিছু ছেঁচে গেছে, এমনকি তার অন্ডকোষের বিচিও বেরিয়ে যায়।”
ঘটনাটি ঘটে যখন শিশুটি খেলতে গিয়ে রাস্তার পাশে চলে যায় এবং রুলার চালকের গাড়ির নিচে চলে আসে। শিশুটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো গ্রামে শোকের মাতম পড়ে যায়। তাকরিমের মা শান্তা খাতুন (৩২) এই মর্মান্তিক ঘটনায় আছড়ে পড়ে এবং অঝোরে কাঁদতে থাকেন। তার বুকফাটা আর্তনাদ শুনে উপস্থিত গ্রামবাসী ও পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে যান।
তাকরিমের পিতা মোঃ আব্দুল্লাহ সর্দ্দার মালয়েশিয়ায় প্রবাসী। মৃত শিশুটির চাচা খলিল সর্দ্দার ও ফুফা ইলিয়াস শিকদার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা রুলার চালককে অদক্ষ এবং অবহেলাকারী হিসেবে দোষারোপ করেন এবং তার শাস্তি দাবি করেন।
রাজাপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মোঃ মিজানুর রহমান জানান, “রুলার চালকের নাম এখনও জানা যায়নি। তবে তদন্ত চলছে এবং এই শিশুর মৃত্যুর ব্যাপারে মিমাংসা করা হচ্ছে।” তিনি আরো জানান, পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে এবং প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন ঘটনাস্থলে এসে পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেন। তিনি বলেন, “আমি পরিবারটির পাশে আছি এবং তাদের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি অঝোরে কাঁদতে থাকেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
ঘটনার পর গ্রামবাসী ও মাগুরার বিএনপি নেতা ফরিদ খান সহ স্থানীয়রা মৃত শিশুর জানাজায় অংশ নেন। তারা তাকরিমের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং রুলার চালকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।