নিউজ ডেস্ক:
মাগুরা, ১১ মে ২০২৫ (মাগুরার কাগজ):
ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর মাগুরার হাজরাপুরে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো লিচু সংগ্রহ উৎসব। ১১ মে ২০২৫, রোববার সকাল ১০টায় সদর উপজেলার ইছাখাদা গ্রামে এই উৎসব ঘিরে স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসীর মাঝে ছিল আনন্দ ও উৎসাহের আমেজ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাসিবুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মাগুরা খামারবাড়ির উপপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বিপিএম এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মেদ।
জেলা প্রশাসক বলেন, হাজরাপুরী লিচু বাংলাদেশের কৃষি ঐতিহ্যের একটি গর্বের অংশ হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। এই স্বীকৃতি মাগুরার কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা জানান, মৌসুমি এই কৃষিপণ্যকে ঘিরে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে, সে লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
খামারবাড়ির উপপরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, হাজরাপুরী লিচু স্বাদ, গন্ধ, আকার ও মানে অনন্য। আধুনিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বিপণনে নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে চাষিদের আরো সক্ষম করে তোলা হবে।
বিএনপি নেতা আলী আহম্মেদ বলেন, কৃষির অগ্রযাত্রা দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সকলের সহযোগিতায় এগিয়ে নিতে হবে। হাজরাপুরী লিচু এ অঞ্চলের গর্ব ও পরিচয়ের প্রতীক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্থানীয় লিচু চাষি সালাউদ্দিন শিমুল বলেন, দুই দশক ধরে লিচু চাষ করছেন তিনি। আগে লিচু শুধু স্থানীয় বাজারেই বিক্রি হতো, এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড় ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। জিআই স্বীকৃতি তাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা থেকে আসা ফল ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, হাজরাপুরী লিচুর স্বাদ ও গুণগত মান এবার অন্য যেকোনো মৌসুমের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত। রপ্তানির সুযোগ তৈরি হলে আন্তর্জাতিক বাজারেও এ লিচু জনপ্রিয় হবে বলে আশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অতিথিরা প্রতীকীভাবে প্রথম লিচু সংগ্রহ করেন। উৎসবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, কৃষকসহ শতাধিক মানুষ। সবারই বিশ্বাস, হাজরাপুরী লিচুর এই অর্জন মাগুরাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন করে পরিচিত করবে।
© All rights reserved © 2025 magurarkagoj.com